Tuesday, February 21, 2017

প্রতিটা সন্তান মায়ের চোখের মনি, নাড়ি ছেঁড়া ধন। মায়ের কাছে তার সন্তান অনেক মূল্যবান অনেক বেশি আদরে। এই আদরের সন্তান যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন সবচেয়ে বেশি অস্থির হয়ে পড়েন মা। আর তা যদি হয় সদ্য জন্মগ্রহণ করা শিশু তবে চিন্তা বেড়ে যায় আরোও বহুগুণ। সাধারণত শরীরে অভ্যন্তরীণ কোন ইনফেকশন দেখা দিলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। যাকে আমরা জ্বর বা ফ্লু বলে থাকি।
অনেক বাবা মা বুঝতে পারেন না তার নবজাতক শিশুটির বার বার জ্বর বা ঠান্ডা কেন লাগছে!একজন নবজাতক শিশু পৃথিবীতে আসার পর প্রথম প্রথম কিছু সমস্যা দেখা দেওয়াটাই স্বাভাবিক। মায়ের গর্ভের তাপমাত্রা, পরিবেশের সাথে বাইরের তাপমাত্রা, পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। সম্পূর্ণ নতুন এক পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে। আর এই খাপ খাইয়ে নিতে গিয়ে শিশুকে পড়তে হয় নানা সমস্যায়। শিশুর সামান্য ঠান্ডা, কাশি থেকে হয়ে যেতে পারে নিউমোনিয়া। যা শিশুর মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
কারণ:
যে সকল কারণে মূলত নবজাতকের সর্দি, ঠাণ্ডা, জ্বর হয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম কিছু কারণ হল।
পরিবারে বড়দের কারোর ভাইরাসজনিত কারণে ঠান্ডা লাগলে তার সংস্পর্শে এসে শিশুর জ্বর হতে পারে।
শিশুর সামনে ধূমপান করলে এই ধোঁয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে আপনার আদরের সোনামণি।
অতিরক্ত ঠান্ডা পরিবেশ এসি, ফ্যানের নিচে থাকার কারণ শিশুর ঠান্ডা, ফ্লু হতে পারে। আবার অতিরিক্ত কাপড় পড়িয়ে রাখলে, ঘাম থেকে ঠান্ডা লেগে জ্বর চলে আসতে পারে। অতিরিক্ত ঠান্ডা কিংবা গরম উভয় পরিবেশ শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
শিশুর ঠান্ডা, জ্বর, ফ্লু ঘরোয়া কিছু উপায়ে ভাল করা সম্ভব। এমন কিছু ঘরোয়া উপায় নিয়ে আজকের এই ফিচার।
১। শিশুকে বিশ্রাম দিন
অনেক সময় ভ্যাকসিন দেওয়ার কারণে শিশুর জ্বর হতে পারে। এই ক্ষেত্রে শিশুকে বিশ্রাম দিন। খুব বেশি কাপড় শিশুর গায়ে রাখবেন না। অল্প কাপড় গায়ে রাখুন। বেশি কাপড় গায়ে থাকলে তা ঘেমে শিশুর জ্বর আরও বেড়ে যেতে পারে।
২। মায়ের দুধ পান
শিশুর বয়স ছয় মাসের কম হলে, তাকে বারবার বুকের দুধ খাওয়ান। আর যদি বয়স হয় ছয় মাসের বেশি, তাহলে অল্প অল্প করে পানি, তরল ও নরম খাবার বারবার খাওয়ানো যেতে পারে।
৩। গরম বাষ্প
গরম বাষ্প শিশুর বুকে জমে থাকা সর্দি, কফ বের করে দিতে সাহায্য করে। নবজাতক শিশুদের ক্ষেত্রে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। ঘরে নেবুলাইজার না থাকলে শিশুকে কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে পারেন। কিংবা একটি কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে তা দিয়ে শিশুর শরীর মুছে দিতে পারেন। এইরকম কয়েকবার করুন। কিছুক্ষণের মধ্যে জ্বর অনেক নেমে গেছেন দেখবেন।
৪।স্যুপ পান
শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি হলে শিশুকে স্যুপ দিতে পারেন। হজম করতে পারে এমন সবজি যেমন আলু, গাজর, পেঁয়াজ, আদা দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন স্যুপ। এটি শিশুর অভ্যন্তরীণ ইনফেকশন দূর করার সাথে সাথে শিশুর পেট ভরিয়ে রাখবে।
৫। নাক পরিষ্কার
নাকে সর্দি জমে বন্ধ হয়ে যায়। তখন শিশুর শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তাই নাক পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। নাকের সর্দি পরিষ্কার করার জন্য দোকানে এক ধরণের ড্রপার পাওয়া যায়। আপনি এটি ব্যবহার করতে না চাইলে, এর পরিবর্তে স্যালাইন ব্যবহার করতে পারেন। একটি ড্রপারে সামান্য নাসাল স্যালাইন নিয়ে সেটি শিশুর নাকের ভেতর দিয়ে দিন। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যে নাকে জমা সর্দি বের হয়ে আসছে। একটি কটন বাডস দিয়ে সেটি পরিষ্কার করে ফেলুন।
৬। ফ্যানের নিচে রাখুন
অনেক বাবা মা শিশুর জ্বর আসলে তাকে ফ্যান থেকে দূরে রাখেন। কিন্তু ফ্যান শিশুর শরীরে তাপমাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। তবে হ্যাঁ খুব বেশিক্ষণ শিশুকে ফ্যানের নিচে রাখবেন না। শিশুর ঘরে ফ্যান বন্ধ রাখবেন না। অল্প গতিতে ফ্যান ছেড়ে শিশুকে ফ্যানের নিচে রাখুন।
৭। খোলামেলা কাপড় পরিধান
জ্বরের সময় শিশুটিকে বেশি কাপড় পরিয়ে রাখবেন না। শিশুটির কাপড় কিছু ঢিলাঢালা করে দিন। কম কাপড় আপনার শিশুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করবে না, বরং তাপমাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করবে। যদি তার শীত লাগে তবে কম্বল বা লেপ জাতীয় কিছু জড়িয়ে দিন শিশুটিকে।

0 comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.

Contact us

Name

Email *

Message *

Followers

Featured Posts

Social Icons

Pages

Facebook

Video

সর্বাধিক পঠিত

Our Facebook Page

Text Widget