Thursday, February 23, 2017

আমরা প্রতিনিয়ত দৈনন্দিন কাজে এবং পারিপাশ্বিক ঘটনায় মানসিকভাবে ও শারিরীকভাবে ক্লান্ত হই। প্রতিদিনের এই ক্লান্তি ধীরে ধীরে হ্রাস করে আমাদের জীবনীশক্তি।
এই ক্লান্তি দূর করে প্রাণবন্ত ও হাস্যোজ্জ্বল থাকতে relaxation বা শরীর শিথীলকরণ খুবই প্রয়োজনীয় একটি প্রক্রিয়া। আমরা ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি শরীর শিথীলকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।
পদ্ধতি ১ (নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম)
  • প্রথমে একটি নিরিবিলি বসার স্থান খুঁজে নিন। স্থানটি আরামদায়ক ও স্বস্তিকর হতে হবে। খুব স্বস্তি নিয়ে যেন বসতে পারেন সেটি খেয়াল রাখুন।
  • হেলান দিয়ে পা-হাত ছেড়ে বসুন। যেন রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
  • ধীরে ধীরে চোখের পাতা বন্ধ করুন।
  • এবারে গভীর এবং খুব লম্বা করে শ্বাস নিন, ধরে রাখুন। কয়েক সেকেন্ড ধরে রেখে নিঃশ্বাসটি ধীরে ধীরে ছেড়ে দিন। এভাবে দুই থেকে তিনবার করুন।
  • এখন আপনার স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। যেভাবে সবসময় নেন।
  • গভীরভাবে নিজ শ্বাস-প্রশ্বাস পর্যবেক্ষণ  করুন। কিভাবে নিশ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন, কেমন করে আপনার মুখ, গলা, চিবুক, কাধঁ, বুক উঠানামা করছে- লক্ষ্য করুন।
  • মনোযোগ দিয়ে দেখুন কি ভঙ্গিতে বসে আছেন। কোথায় বসে আছেন।
  • এভাবে কয়েকবার মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পুরো শরীর স্ক্যান (পর্যবেক্ষণ) করুন।
  • যখন পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে তখন ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকান।
*  ব্যায়ামটি বসে করার চেষ্টা করুন যেন শুয়ে না পড়তে হয়। পুরো কাজটি করার সময় ঘুমিয়ে যাবেন না।
* পুরো পদ্ধতিটি ৫ থেকে  ১০ মিনিট সময়ের মধ্যে করুন।


পদ্ধতি-২ ( মনের বাগান)
  • শুরুতে একটি আরামদায়ক ও নিরিবিলি স্থানে হেলান দিয়ে বসুন। ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করুন।
  • এবারে গভীরভাবে লম্বাকরে এক থেকে দু’বার নিঃশ্বাস গ্রহণ করুন এবং ধীরে ধীরে ছেড়ে দিন।
  • এখন স্বাভাবিক নিঃশ্বাস গ্রহণ করুন এবং পুরো মনোযোগ নিজের দিকে দিন।
  • কল্পনা করুন একটি খোলা জায়গাতে আপনি দাঁড়িয়ে আছেন। সামনে বিশাল বড় খোলা জায়গা। যতটুকু জায়গা ইচ্ছা হয় আপনি ঘুরে দেখুন এবং আপনার মনের বাগান করার জন্য ‍জায়গা নির্বাচন করুন। যতটুকু বড় বা ছোট আকার আপনি দিতে চান ঠিক ততটুকু নিন।
  • এবারে বাগানের মাটিতে ঘাস বা ফুলের গাছ লাগান। আপনার পছন্দের সবকটি ফুল বা ফল বা যে গাছটি আপনি চান নিয়ে আসুন এবং লাগিয়ে দিন। গাছগুলো বড় বা ছোট হতে পারে। বাগানের কোন দিকে কিভাবে গাছ লাগাবেন সেটি সম্পূর্ণ আপনার পছন্দ ও রুচি অনুযায়ী করুন।
  • বাগানের চারিদিকে কি থাকবে সেটি তৈরি করুন। আপনি কি কোন বেড়া বা দেয়াল দিয়ে সংরক্ষিত রাখতে চান কিংবা ইচ্ছা হলে চারপাশটা উন্মুক্ত রাখতে পারেন।
  • আপনার মনের এই বাগানটি কিসের পাশে আছে সেটি নির্ধারণ করুন। যেমন এটি কোন নদীর ধারে বা ঘন জঙ্গলে বা পাহাড়ে বা রাস্তার ধারে যে জায়গায় থাকলে আপনার ভাল লাগবে সেখানে কল্পনা করুন।
  • আপনি বাগানের মধ্যে আর কি কি ল্যান্ডস্কেপিং করতে চান দেখুন। সাজানোর জিনিস বা চাইলেই নতুন কোন আঙ্গিকে এটি তৈরি করতে পারেন।
  • বাগানের মাঝে একটি পানির ফোয়াড়া বা পুকুর বা যেকোন water body বসিয়ে দিন। পানিতে ইচ্ছা হলে মাছ বা ঝিনুক বা যেমনটা চান তেমনটি রাখতে পারেন।
  • এবারে বাগানের ভেতরে কিছু প্রাণী যেমন – পাখি, খরগোশ, হরিণ বা যে কোন প্রাণী নিয়ে আসুন যেটা আপনি পছন্দ করেন। তাদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ানো অবলোকন করুন।
  • এখন বাগানে বসার জন্য একটি জায়গা তৈরি করুন। যেখানে আপনি অনেক প্রশান্তি নিয়ে আরামের সথে বসতে পারবেন।
  • বাগানের ভেতরের কাজ শেষ হয়ে গেলে একটু চারদিক ঘুরে দেখুন আর কোন পরিবর্তন বা সংযোজন করতে চান কিনা। চাইলে সেটি করুন।
  • বাগানের পুরোটা ঘুরে বেড়ান এবং এর মুক্ত ও বিশুদ্ধ বায়ু বুক ভরে গ্রহণ করুন। বাতাসের শব্দ পাখির কিচির মিচির কান পেতে শুনুন।
  • এবারে বাগানে আপনার পছন্দের সেই মানুষগুলোকে আনুন যাদের আপনি খুব পছন্দ করেন। হতে পারে সেটি একজন বা দুইজন বা অনেকজন। তাদেরকে বাগানের প্রতিটা জায়গা ঘুরিয়ে দেখান। আপনার মনের বাগানটিকে আপনি যে এত চমৎকার ভাবে তৈরি করেছেন তা তাদেরকে দেখান।
  • দেখুন তারা আপনার বাগানের সৌন্দর্য্য ও সাজানোর প্রশংসা করছে। খুব খুশী হয়ে দেখছে এই চমৎকার আয়োজন। তাদেরকে ধন্যবাদ দিন।
  • ধীরে ধীরে তাদেরকে বাগান ঘুরানোর শেষে একে একে বিদায় দিন।
  • এখন আপনি আরো একবার পুরো বাগানটা ঘুরে আসুন। সবগুলো উপাদান যা যা দিয়ে , যে রং বা যে প্রাণী বা উপকরণ দিয়ে বাগানটি সাজিয়েছেন এক পলক ঘুরে দেখুন। দেখা শেষ হলে ধীরে ধীরে প্রক্রিয়াটি থেকে বের হয়ে আসুন এবং চোখ মেলে তাকান।
*এটি শুধুমাত্র শরীর শিথিলকরণ ব্যায়াম নয়, এটি আপনার একটি নিরাপদ ও পছন্দের জায়গা। যখন ইচ্ছ হবে আপনি চাইলেই সেখানে যেতে পারেন। এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন। এত সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর মনের বাগান তৈরির জন্য আপনাকে অনেক অভিনন্দন।

পদ্ধতি ৩ ( সোনালী আলো)

  • প্রতিটা পদ্ধতির শুরুতেই আরামদায়ক, স্বস্তিকর ও নিরিবিলি জায়গা বেছে নিতে হবে।
  • হেলান দিয়ে আরাম করে বসুন এবং ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করুন।
  • স্বাভাবিক ভাবে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করুন ও শান্তভাবে ছেড়ে দিন।
  • এখন পুরো মনোযোগ আপনি নিজের দিকে দিন।
  • আস্তে আস্তে কল্পনা করুন আপনার কপালের ঠিক দুই ভ্রুর মাঝখানে একটি ছোট সোনালী আলোর বিন্দু তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে আস্তে আস্তে সোনালী আলো বের হচ্ছে।
  • খেয়াল করুন সেই আলো বের হয়ে আপনার আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। আলোটি আপনাকে পুরোপুরি ঘিরে রেখেছে। যা পুরো ঘরকে একটা সোনালী আভায় পূর্ণ করে রেখেছে।
  • এবারে নিজেকে ঐ সোনালী আলোর মাঝখানে রেখে অনুভব করুন একরকম প্রশান্তি, সম্মান, উষ্ণতা, ভালোবাসা দিয়ে এটি আপনাকে ঘিরে রেখেছে। আপনার মনের মধ্যে এক অদ্ভুত ভালো লাগায় ভরে যাচ্ছে।
    ঐ সোনালী আলোটি আপনার নিজের তৈরি করা। যা আপনার কপাল থেকে বের হচ্ছে।
  • কল্পনা করুন আপনি উঠে দাঁড়িয়ে আপনার ঘরের জানালা দিয়ে বাহিরে তাকাচ্ছেন। আপনার সাথে সাথে সেই সোনালী আলো জানালা দিয়ে বাহিরে ঠিকরে পরছে। আপনি অবাক বিস্ময়ে সে দৃশ্য দেখছেন। বাহিরে সে সবগুলো প্রিয় মুখ দেখতে পাচ্ছেন যাদেরকে আপনি দেখতে চান। সেই সব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে পাচ্ছেন যা আপনি পছন্দ করেন। এখানে খানিকটা সময় থাকুন।
  • এবারে আবারো আপনার বসার স্থানে ফিরে যান। কল্পনায় দেখুন পুরো ঘরময় সেই সোনালী আলো যা আপনার কপাল থেকে বের হচ্ছে তা ছড়িয়ে আপনাকে অনেক ভালোবাসা, উষ্ণতা ও সম্মানে জড়িয়ে আছে।
  • ধীরে ধীরে সেই আলোর সবটুকু অনুভূতি নিয়ে এই পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসুন। চোখ মেলে তাকান।
নিজেকে আবিষ্কার করুন এক অসম্ভব ভালোলাগার অনুভূতি নিয়ে। আপনার মন ও শরীর দুটোই পরিপূর্ণ হল ভালোবাসা আর সম্পূর্ণ আপনার নিজস্ব প্রাণশক্তি দিয়ে। আপনার জন্য শুভকামনা।

পদ্ধতি -৪ ( মেঘলা আকাশ)

  • আগের মতই নিরিবিলি, আরামদায়ক একটি জায়গায় হেলান দিয়ে বসুন।
  • ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করুন এবং নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক উঠানামা লক্ষ্য করুন।
  • চোখ বন্ধ অবস্থায় কল্পনায় আকাশ দেখুন। আকাশের গাঢ় নীল রং দেখুন। রংটির আভা কিভাবে সারা পৃথিবীকে আবৃত করে রেখেছে দেখুন।
  • কিছুক্ষণ পর দেখুন যে অনেক সাদা সাদা মেঘ আকাশের এক দিক থেকে অন্যদিকে ভেসে যাচ্ছে। মেঘের জায়গা বদল মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করুন।
  • খেয়াল করুন যে মেঘ গুলো এক পাশ থেকে আরেকপাশে যাচ্ছে তা কি এক রকম নাকি ভিন্ন। কোনটা বড়, কোনটা ছোট। কোন মেঘ পাতলা, কোনটা ঘন। কোনটাই স্থায়ী হচ্ছে না।
  • মেঘগুলো দেখুন আর মনে মনে ভাবুন আপনার জীবনে এমন অনেক খারাপ লাগা আছে । কোনটা গভীর কষ্টের কোনটা কম কষ্টের। এই মেঘগুলোর মতই ঐ কষ্টগুলো স্থায়ী নয়।
  • মেঘগুলো যেমন আকাশের বৈশিষ্ট্য বদলাতে পারেনা। নীল আকাশী রং আকাশের নিজস্ব। তেমনি আমাদের কষ্টগুলো আমাদের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত করতে পারেনা। এভাবেই মেঘের ভেসে যাওয়ার মত কষ্টগুলো ভেসে চলে যায়।
  • ভাবুন আপনার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য, সজীবতা, প্রাণবন্ততা, মানসিক শক্তি আকাশের মতই নিজস্ব থাকবে। এবং এজন্য আপনি নিজেকে আর আপনার সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিন।
  • এখন ধীরে ধীরে আপনার নিঃশ্বাস প্রশ্বাস লক্ষ্য করুন এবং এই প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে আসুন। চোখ মেলে তাকান।
আপনি আপনার বৈশিষ্ট্য, গুণাবলি ও প্রাণবন্ত অনুভূতি নিয়ে এবার ফিরে যান প্রতিদিনের কাজকর্মে এবং অনেক অনেক হাস্যোজ্জ্বল ও উদ্দীপনায় ভরপুর থাকুন।

পদ্ধতি-৫ ( অনুভবে ইন্দ্রিয়)

  • একই ভাবে আরামদায়ক স্থানে বসতে হবে। যেখানে বসবেন তা যেন নিরিবিলি ও স্বস্তিকর হয়।
  • ধীরে ধীরে শ্বাস গ্রহণ করুন এবং ছাড়ুন। দুই থেকে চারবার লম্বা করে কিন্তু ধীরগতিতে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিন।
  • ধীরে ধীরে আপনার চোখ বন্ধ করুন। যারা চোখ বন্ধ করতে অসুবিধা হবে তারা চোখ খোলা রেখে একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে তাকিয়ে থাকতে পারেন। (তবে চোখ বন্ধ রাখলেই এই পদ্ধতি বেশী কার্যকর হয়)।
  • আপনি যেহেতু চোখ বন্ধ করে নিচ্ছেন দর্শন ইন্দ্রিয়কে আমরা পুরোপুরি বিশ্রাম দিয়ে আমাদের অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলোকে এবার একে একে মনোযোগ দিব। প্রথমে সমস্ত শরীরে কোথাও খুব শক্ত হয়ে আছে কিনা দেখুন। শরীরের কোন অংশ টাইট বা শক্ত হয়ে থাকলে সেটি শিথিল করে দিন।
  • যেখানে বসে আছেন সেই জায়গাটি স্পর্শ করুন। সেটি নরম নাকি শক্ত, কি উপাদানে তৈরি অনুভব করুন। যেখানে বসে আছেন সেখানে শীত নাকি গরম বা বায়ুর চাপ নাকি হালকা অনুভূতি হচ্ছে বুঝার চেষ্টা করুন।
  • স্পর্শ অনুভব বা ত্বক ইন্দ্রিয়ের অনুভূতি নেওয়ার পর আমরা শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের অনুভূতি নিব। বুঝার চেষ্টা করুন আশে পাশে কি কি শব্দ আপনার কানে আসছে। পাখির ডাক, বাতাসের শব্দ, গাড়ির হর্ন, মানুষের কণ্ঠস্বর, হাঁটাচলার শব্দ বা যন্ত্রপাতির টুংটাং ইত্যাদি আলাদা করে শুনতে চেষ্টা করুন। শব্দগুলো কত দূর হতে আসছে সেটিও লক্ষ্য করুন।
  • এবার ঘ্রাণেন্দ্রিয় এর মাধ্যমে ঘ্রাণ নিন। নাকে কি কি ঘ্রাণ আসছে তা অনুভব করুন। এমন হতে পারে কোন ঘ্রাণ নাকে আসছে না এতে অবাক হওয়ার কিছু নাই। এমনটি হতেই পারে।
  • স্বাদ আর দর্শন ইন্দ্রিয় ছাড়া অন্য ইন্দ্রিয়ের অনুভব হয়ে গেলে সবগুলো ইন্দ্রিয়ের সমন্বয়ে এবার নিজেকে এবং নিজের অস্তিত্বকে অনুভব করুন।
  • পরিবেশের সাথে আপনার ইন্দ্রিয়ের সংযোগ লক্ষ্য করুন।
  • সবশেষে নিজেকে ধন্যবাদ দিন এত চমৎকার ভাবে শরীর শিথিলকরণের পর্বটি সম্পন্ন করার জন্য। এরপর প্রক্রিয়াটি থেকে বের হয়ে আসুন।
এই পদ্ধতিতে দর্শন এবং স্বাদ ইন্দ্রিয় কে ব্যবহার করা হয়নি কারণ স্বাভাবিকভাবে আমাদের এই দুটি ইন্দ্রিয় বেশী কাজ করে থাকে এবং আমরা অন্য ইন্দ্রিয়গুলোর অস্তিত্ব খুব একটা অনুভব করি না কিংবা করতে চাই না। তাই এই পদ্ধতিতে বহুল ব্যবহৃত ইন্দ্রিয় দুটি বিশ্রামে থাকবে। আসা করি এই পদ্ধতিটিও আপনাকে প্রাণবন্ত ও হাস্যোজ্জ্বল রাখবে কারণ ইন্দ্রিয়ের অফুরন্ত শক্তি আপনি সঞ্চয় করেছেন।


0 comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.

Contact us

Name

Email *

Message *

Followers

Featured Posts

Social Icons

Pages

Facebook

Video

সর্বাধিক পঠিত

Our Facebook Page

Text Widget