Monday, April 3, 2017

কমবেশি ভয় অনেকেরই লাগে। কিন্তু এই ভয়ের কারণে যখন কোন ব্যক্তির কাজের ব্যাঘাত ঘটে, চলাফেলা সীমাবদ্ধ হয়ে যায় তখনই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এই ভয়ভীতি সমস্যা নিয়ে ফকির-কবিরাজ এ-ডাক্তার ও-ডাক্তার দেখাতে দেখাতে সর্বস্বান্ত হয়েছে অনেকে।
লক্ষণ:
১. অহেতুক ভীতি, বুকধড়ফড়, অস্থির, অশান্তি লাগা।
২. হঠাৎ দুঃসংবাদ কিছু শুনলে খুব বেশি নার্ভাস হয়ে যায়, মুখ শুকিয়ে যায়, অস্থির হয়ে পড়ে, মাথায় পানি ঢালতে হয়।
৩. দেখা গেছে, সিলেট থেকে ঢাকা আসার সময় আমজাদ মিয়া তার ৬ বছরের ছেলেকে সঙ্গে করে আসছেন কারণ পথে যদি পড়ে যাই অথবা অসুস্থ হয়ে যাই, ছেলে ধরতে পারবে। সঙ্গে লোক থাকলে সাহস লাগে তখন চলাফেরা করা যায়।
৪. বাথরুমে গেলে দরজা খোলা রাখতে হয়, দরজা বন্ধ করলে দম আটকে আসে।
৫. দেখা যায় পরীক্ষার ভয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হয়ে যায়। কেউ কেউ এত নার্ভাস থাকে যে, তিনদিন আগে থেকেই বুক লাফায়, মুখ শুকায়, কথা বের হয় না, ঘুম হয় না, পাতলা-পায়খানা শুরু হয়ে যায়।
৬. পাত্র পক্ষ মেয়েকে দেখতে আসেব, টেনশনে অস্থির কিভাবে ছেলের মার কাছে হাজির হবে, কি জিজ্ঞাসা করবে? এসব টেনশনে মেয়ের ঘুম, খাওয়া-দাওয়া বন্ধ প্রায়।
৭. সৌদি চাকরি করতে যাবে সবকিছু ঠিকঠাক কিন্তু বাধা হলো বিমানে উঠতে ভয়, পরে বাধ্য হয়ে ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
৮. এমনও দেখা গেছে, বেশি মানুষের সামনে দিয়ে হাঁটাচলা করতে পারে না মনে হয় মানুষগুলো তার দিকে শকুনের মতো তাকিয়ে আছে।
৯. সুলতান মিয়া অফিসে বসের ভয়ে চাকরি ছাড়ার উপক্রম। বসকে দেখলেই বুক ধড়ফড়, কাঁপে, অস্থির লাগে। পরে আত্মীয়স্বজনের পরামর্শ ক্রমে সাইক্রিয়াটিক দ্বারা চিকিৎসা করে এখন নিয়মিত চাকরি করছে।
১০. শিক্ষকদের বেত ও মারের ভয়ে মাদ্রাসার ছাত্র লিমন এখন পড়ালেখাই বন্ধ করে দিয়েছে।
১১. বাইরের গেটের চাবি হাতে না থাকলে টেনশনের আর শেষ থাকে না। যদি অসুস্থ হয়ে যাই বের হবো কিভাবে এই রকম হাজারো রোগী অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিভিন্ন ডাক্তার দেখিয়ে কোন ফল পায় নাই তখন রোগীদের ভীতি আরও বেড়ে যায়। এক সময় তারা ঘর থেকেই বের হতে ভয় পায়।

কি কি কারণে হয়
১. কবরস্থান, মৃত ব্যক্তি, দুর্ঘটনার খবর, রোগী, হাসপাতাল, রক্ত ইত্যাদির ভয়।
২. অহেতুক ভয় যদি পড়ে যাই। নিকট আত্মীয় কেউ হার্টের অসুখে মারা গেছে তারপর থেকেও ভয় শুরু হতে পারে।
৩. শিক্ষকদের বেতের অথবা মারের ভয়।
৪. অফিসের বসের ভয়।
৫. পোকা-মাকড়ের ভয়।
৬. বিমানে উঠতে ভয়।
৭. পরীক্ষার আগে ভয়।

কাদের মধ্যে বেশি
১. ছোটবেলা থেকেই লাজুক প্রকৃতির, কম কথা বলে, বন্ধুত্ব কমÑএই ধরনের ছেলেমেয়েদেরও মধ্যে বেশি দেখা যায়।
২. বিভিন্ন সামাজিক বাধার মধ্যে বড় হয়েছে এমন ছেলেমেয়েদেরও দেখা যায়।
৩. মানসিক চাপের মধ্যে ছিল অথবা জীবনে কোন নেতিবাচক পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে বায়োলজিক্যাল কারণ। অতএব, ফোবিয়া একটি মানসিক সমস্যা। যার চিকিৎসা আছে। এই চিকিৎসায় ১০০% রোগীই সুস্থ হয়ে যায় এবং যার যার কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারে। 

0 comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.

Contact us

Name

Email *

Message *

Followers

Featured Posts

Social Icons

Pages

Facebook

Video

সর্বাধিক পঠিত

Our Facebook Page

Text Widget