Monday, February 20, 2017

দম্পতিদের ক্ষেত্রে ব্লাড গ্রুপের হেরফেরের জন্য বেশ কিছু অসুবিধা হতে পারে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ব্লাড গ্রুপ A, B, AB এবং O-এর ভিন্নতার জন্য কোনো অসুবিধা হয় না। সমস্যা শুধু পজিটিভ এবং নেগেটিভ নিয়ে অর্থাৎ Rh ফ্যাক্টরের ভিন্নতা নিয়ে। এমনকি A, B, AB এবং O-এর ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী একই গ্রুপের হওয়া সত্ত্বেও একজন পজিটিভ এবং অন্যজন নেগেটিভ হলে তাদের সন্তানের জন্য তা মারাত্মক। এ ক্ষেত্রে অবশ্য মায়ের রক্তের গ্রুপই প্রধানত দায়ী।
এক নারী যার ব্লাড গ্রুপ নেগেটিভ, সে যদি এমন এক পুরুষকে বিয়ে করে যার ব্লাড গ্রুপ পজিটিভ তাহলে এই দম্পতির ক্ষেত্রে স্ত্রীর গর্ভে যে সন্তান লালিত হবে তার ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ অথবা নেগেটিভ দুই-ই হতে পারে। সন্তানের ব্লাড গ্রুপ নেগেটিভ হলে সাধারণত কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু সন্তান পজিটিভ হলেই এই মারাত্মক দিকে সন্তান এগিয়ে যায়।

এক পুরুষ যিনি Rh পজিটিভ অথবা নেগেটিভ তিনি কিন্তু যেকোনো পজিটিভ গ্রুপের মহিলার গর্ভে সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম। কিন্তু একজন নেগেটিভ রক্তের গ্রুপের মহিলা কেবল নেগেটিভ গ্রুপের পুরুষের মাধ্যমেই সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে পারেন। নেগেটিভ গ্রুপের মহিলা পজিটিভ গ্রুপের স্বামীর ঔরসে যে সন্তান ধারণ করবেন জরায়ুতে বর্ধিত তার পজিটিভ রক্ত মায়ের নেগেটিভ রক্তের সাথে মিশে যায়। ফলে মায়ের রক্তে Rh অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয় তা আবার শিশুর রক্তে প্রবেশ করে এবং শিশুর রক্তে অ্যান্টিজেন অ্যান্টিবডি রিঅ্যাকশন ঘটে, রক্ত জমাট বেঁধে যায়, রক্তের লোহিত কণিকা ভেঙে যায়, বাচ্চা রক্তস্বল্পতায় ভোগে এবং জন্ডিস দেখা দেয়।
গর্ভাবস্থায় অথবা নবজাতক সন্তানের এই মারাত্মক রোগকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় ‘ইরাইথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস।’ সাধারণত দম্পতির প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে উৎপন্ন অ্যান্টিবডির পরিমাণ খুব কম থাকার কারণে এই রোগের কোনো লক্ষণ প্রকাশিত হয় না। দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ এবং তৃতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সন্তান এই রোগে আক্রান্ত হয়। পরবর্তী প্রতি গর্ভধারণে এই হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে।
প্রশ্ন আসে, এ রোগের কি চিকিৎসা নেই? চিকিৎসা নেই তা নয়। তবে প্রতিরোধই সবচেয়ে উত্তম। জন্মের পরপরই নবজাতকের পজিটিভ রক্ত সরিয়ে নেগেটিভ রক্ত প্রতি স্থাপন করে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। তাই গর্ভকালীন চেকআপে মায়ের রক্তে Rh অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলে অথবা নবজাতক যদি জন্ডিসে আক্রান্ত হয় বা হাত-পা শক্ত হতে থাকে তবে শিগগিরই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কিন্তু একটা জিনিস ভাবুন, নবজাতকের জন্য এই মারাত্মক রোগটি ইচ্ছা করলেই কিন্তু প্রতিরোধ করা যায়। বিয়ের আগে ব্লাড গ্রুপ জেনে নিয়ে প্রথমেই এ সমস্যার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।
ডা: ওয়ানাইজা রহমান
- See more at: http://www.sylheterkantho24.com/news/details/Life_Style/32941#sthash.36r5B6OE.dpuf

0 comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.

Contact us

Name

Email *

Message *

Followers

Featured Posts

Social Icons

Pages

Facebook

Video

সর্বাধিক পঠিত

Our Facebook Page

Text Widget