Saturday, April 8, 2017

দাঁতের ব্যাথাকে আমরা অনেকে আমল দেই না। প্রয়োজনমতো দাঁতের যত্ন নেই না, ডেন্টিস্টের কাছে যাই না নিয়মিত। এর পর যখন দাঁতের ব্যথায় প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় তখনই কেবল ডেন্টিস্টের কাছে দৌড়াই। কিন্তু দাঁত ব্যথার রয়েছে বড়ই বাজে একটা অভ্যাস। রাতের বেলায় যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে, ডেন্টিস্ট যখন চেম্বার বন্ধ করে বাড়ি চলে গেছে তখনই দাঁত ব্যথা চরম আকৃতি ধারণ করে। তখন সকাল পর্যন্ত ব্যথা সহ্য করা ছাড়া উপায় থাকে না। আর এই শীতে তো দাঁতের ব্যথা বেড়েও যায় অনেক গুণে। অনেকে পেইনকিলার খেয়ে বসে থাকেন, যদিও পেইনকিলার শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। জানেন কি, আপনার রান্নাঘরে পড়ে থাকা কিছু উপাদান দিয়ে আপনি তৈরি করে নিতে পারেন একদম প্রাকৃতিক এবং কার্যকরী কিছু পেইনকিলার। দাঁতে ব্যথা হলে ডেন্টিস্ট দেখাতে হবে অবশ্যই, কিন্তু তার আগ পর্যন্ত ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এই ঘরোয়া ওষুধগুলো কাজ করে জাদুর মতো!
১) লবণ পানি
– একেবারে সাধারণ এবং প্রচলিত এই প্রক্রিয়া আসলেই কার্যকর। এক গ্লাস গরম পানিতে বেশি করে লবণ গুলে কুলকুচি করুন যতক্ষণ সম্ভব। দাঁতের ব্যথার কারন হিসেবে যদি কোনও জীবাণু থেকে থাকে তবে তা দূর হবে। এছাড়াও মাড়িতে রক্ত চলাচল ভালো করে দেয় এবং সাময়িকভাবে দাঁত ব্যাথা কমে আসে। তবে এই লবণ পানি খেয়ে ফেলবেন না যেন। কুলকুচি করে ফেলে দেবেন।
২) লবঙ্গ
– যে দাঁতটা ব্যথা করছে, তার ওপরে বা পাশে (যেখানে ব্যাথা) একটা লবঙ্গ রেখে দিন। মাড়ি আর দাঁতের মাঝে বা দুই চোয়ালের মাঝে এই লবঙ্গ চেপে রাখতে পারেন যতক্ষণ না ব্যথা চলে যায়। লবঙ্গের তেল ব্যবহার করতে পারেন তবে দুই-এক ফোঁটার বেশি নয়। লবঙ্গ গুঁড়োর সাথে পানি বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করেও লাগাতে পারেন।
৩) আদা
– এক টুকরো আদা কেটে নিন এবং যে দাঁতে ব্যথা করছে সে দাঁত দিয়ে চিবাতে থাকুন। যদি চিবাতে বেশি ব্যথা লাগে তাহলে অন্য পাশের দাঁত দিয়ে চিবিয়ে যে রস এবং আদার পেস্ট তৈরি হবে সেটা ওই আক্রান্ত দাঁতের কাছে নিয়ে যান। জিহ্বা দিয়ে একটু চেপে রাখুন দাঁতের কাছে। কিছুক্ষণের মাঝেই ব্যথা চলে যাবে।
৪) রসুন
– এক কোয়া রসুন থেঁতো করে নিয়ে দাঁতের ওপর লাগিয়ে রাখুন। রসুনের সাথে একটু লবণও মিশিয়ে লাগাতে পারেন।
৫) পেঁয়াজ
– টাটকা এবং রসালো এক টুকরো পেঁয়াজ কেটে নিয়ে সেটা আক্রান্ত দাঁতের ওপর চেপে রাখুন। পেয়াজের রসটা উপকারে আসবে।
৬) মরিচ
– হ্যাঁ মরিচ। শুকনো মরিচের গুঁড়ো দিয়ে পেস্ট তৈরি করে দাঁতের ওপরে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে মরিচের ভেতরে থাকা উপাদান আপনার দাঁতের ওই ব্যাথাকে অবশ করে দেবে। গোলমরিচের গুঁড়োও ব্যবহার করতে পারেন।
৭) বেকিং সোডা
– একটা কটন বাড একটু পানিতে ভিজিয়ে নিন। এর মাথায় অনেকটা বেকিং সোডা লাগিয়ে নিয়ে আক্রান্ত দাঁতের ওপরে প্রয়োগ করুন। আরেক ভাবেও বেকিং সোডা ব্যবহার করা যায়। এক চামচ বেকিং সোডা এক গ্লাস গরম পানিতে গুলিয়ে সেটা দিয়ে কুলকুচি করে ফেলুন।
মনে রাখবেনঃ-
আপনার দাঁত ব্যথা করছে তার মানে নিশ্চয়ই দাঁতের ভেতরে কোনো সমস্যা আছে এবং অবশ্যই ডেন্টিস্টের সাহায্য ছাড়া সে সমস্যার থেকে মুক্ত হওয়া যাবে না। ঘরোয়া এই প্রতিকারগুলো আপনাকে কিছুটা সময়ের জন্য ব্যথা থেকে মুক্তি দিচ্ছে বলেই ডাক্তার দেখানোর কথাটা ভুলে যাবেন না যেন। বিশেষ করে যদি মাড়ি ফুলে যায় তবে বুঝতে হবে ইনফেকশন হয়ে গেছে এবং অতি সত্তর ডেন্টিস্টের সাথে দেখা করুন।
সব মানুষই চায় সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন।এর জন্য যে কাজ গুলো করতে হয় তা করতে গিয়ে অনেকেই হোঁচট খান। মানুষ ভবিষ্যতের লাভের জন্য বর্তমানের আনন্দকে ত্যাগ করাটা খুব কঠিন মনে করে। বর্তমান শতাব্দীতে উন্নত ঔষধ, উন্নত স্যানিটেশন, নিরাপত্তা, কাজের পরিবেশ ও ব্যাক্তি সতর্কতার ফলে বিশ্বের প্রথম সাড়ির দেশ গুলুতে গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে একজন পুরুষের গড় আয়ু ৬৮.৫ বছর এবং একজন মহিলার গড় আয়ু ৭৩.৫বছর। শুধুমাত্র দীর্ঘ জীবন নয় সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন পাওয়ার জন্য কতগুলো পন্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

আসুন জেনে নেই সেই পন্থা গুলো ও এগুলো অনুসরণের মাধ্যমে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভ করি:

১। প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ বন্ধ করুন
প্রক্রিয়াজাত খাবারে অনেক বেশি চিনি, লবণ ও ফ্যাট থাকে এবং এইসব খাবারে ফাইবার/ আঁশ কম থাকে। প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে হার্ট অ্যাটাক, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।তাই আপনার খাদ্য তালিকা থেকে প্রসেসড ফুড বাদ দিয়ে শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশ জাতীয় খাবার খান,ধূমপানের অভ্যাস থাকলে বাদ দিন এবং প্রচুর পানি পান করুন।
২। নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিন
নেতিবাচকতা আপনার ভেতরের শক্তিকে নষ্ট করে দেয় এবং আপনার স্ট্রেস লেভেল বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে রাগ, হতাশা, বিষণ্ণতা ও উদ্বিগ্নতা বৃদ্ধি পায় এবং অধিক খাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তাই নেতিবাচকতা পরিহার করে ইতিবাচক হোন। আপনার জীবনের লক্ষ্য ঠিক করুন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করুন এতে আপনার স্ট্রেস কমবে ফলে আপনি দীর্ঘজীবী হবেন।
৩। একভাবে বসে থাকবেন না
বর্তমানের একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, ব্যায়ামের মাধমে দীর্ঘমেয়াদি অসুখ যেমন- ক্যান্সার ও স্থূলতা র সম্ভাবনা কমায়। দিনে ৩০ মিনিটের ব্যায়াম আপনার আয়ু বাড়িয়ে দেবে। ২০১১ সালে The Lancet e প্রকাশিত গবেষণা পত্রে দেখা গেছে যে, দিনে ১৫ মিনিটের ব্যায়াম যারা করেছেন তাদের আয়ু ৩ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যারা দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করেছেন তাদের আয়ু ৪ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। তাইওয়ানের ৪১৬০০০ নারী ও পুরুষ কে নিয়ে এই গবেষণাটি করা হয়। তাই দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা লাভের জন্য সারাদিনের কিছুটা সময় বেছে নিন ব্যায়ামের জন্য।
৪। রাতের ঘুম ছাড় দেবেন না
ঘুমের ব্যাপারে কার্পণ্য করবেন না। স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন এর জন্য প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন । ২০০৭ সালে ঘুম বিষয়ক একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা পত্র থেকে জানা যায় যে , ঘুমের হ্রাস বৃদ্ধি মানুষের মৃত্যু হারের উপর প্রভাব বিস্তার করে। নিয়মিত কম ঘুমালে হৃদরোগ,ডায়াবেটিস ও স্থূলতার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আর নিয়মিত ভালো ঘুম হলে স্ট্রেস, ডিপ্রেশন ও হার্ট ডিজিজ দ্রুত ভালো হয়।
বড় কোন পরিবর্তন নয় ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজের জীবনযাপনের ধরণের পরিবর্তন করুন। আপনার বাবা বা দাদা অনেকদিন বেঁচে ছিলেন বলে আপনিও অনেকদিন বেঁচে থাকবেন তাই সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভের জন্য আপনাকে কোন চেষ্টা করতে হবেনা এমনটা ভাববেন না। আবার আপনার পূর্ব পুরুষ রা দীর্ঘায়ু লাভ করেন নি বলে আপনি ও দীর্ঘজীবী হতে পারবেন না এই ধরণের ধারণা বা ভয় ও লালন করা ঠিক না। ইতিবাচক ভাবে চিন্তা করুন এবং জীবনে সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু লাভ করে জীবনকে পরিপূর্ণ ভাবে উপভোগ করুন।
শারীরিক ও মানসিক ভাবে ভালো থাকার জন্য ইয়োগা করা ভালো। ইয়োগা টিচার লরেন জেকব তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে বলেন যে-ইয়োগা সম্পর্কে বাস্তবিক ধারনা না নিয়েই যারা ইয়োগা শুরু করেন, তাদের অনেককেই তিনি বলতে শুনেছেন যে –“ইয়োগা আমার জন্য না”। যে কাজে আমরা আমাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করি সে কাজে অস্বস্তি বোধ করলে সেই কাজটি আমাদের পছন্দ হবেনা এবং সবসময় দ্রত ফল আশা করাটাই আমাদের স্বভাব। কিন্তু অন্যান্য কাজের মতো ইয়োগার ফল এতো তাড়াতাড়ি পাওয়া যায় না। তাই ইয়োগা শুরু করার আগে কিছু বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন। আর তা হল-
১। যে কোন মানুষ ইয়োগা করতে পারেন
ইয়োগা সূত্র অনুযায়ী ইয়োগা করার জন্য একমাত্র যোগ্যতা হচ্ছে, মনোযোগী হওয়া বা আপনার কাজের প্রতি ফোকাস করতে পারা। মনকে শান্ত করুন এবং যে কাজ করছেন তার প্রতি পূর্ণরূপে মন নিবদ্ধ করুন। তাহলেই আপনি একজন যোগী হতে পারবেন।
২। আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে
জীবনের মত ইয়োগাকেও দীর্ঘ একটি ভ্রমণ হিসেবে চিন্তা করতে হবে যেখানে হেরে যাওয়া বা জয় লাভ করার কিছু নেই। আপনার নিজের জন্যই আপনাকে এই চর্চায় অংশগ্রহণ করতে হবে। তাই নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। এছাড়া এর সুফল পাওয়া সম্ভব নয়।
৩। ভরা পেটে ইয়োগা করবেন না
ইয়োগা টিচার ক্রিস্টিন ম্যাকগি এর মতে ইয়োগা অনুশীলনের ১ ঘন্টা আগে খেয়ে নিতে হবে। যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে ইয়োগা করার ২০ মিনিট আগে ১টা কলা খেয়ে নিতে পারেন। খাওয়ার সাথে সাথে ইয়োগা করলে হজমে সমস্যা হতে পারে।
৪। সব সময় ভাবতে হবে যে মাত্রই শুরু করেছেন
অনুশীলনে মাস বা বছর পার হয়ে গেলেও নিজেকে আরম্ভকারী হিসেবেই গণ্য করতে হবে। যে নিয়ম গুলো শিখছেন তা মনে রাখার চেষ্টা করুন। যদি আপনি ৫০০ ঘন্টার ইয়োগা টিচার্স ট্রেনিং ও সম্পন্ন করে ফেলেন তাও আপনাকে মনে করতে হবে যে,আপনি এখন ও শিক্ষানবিস আছেন।
৫। দমই সবকিছু
ক্লাসের প্রথম দিন থেকে দম নেয়া ও দম ছাড়ার প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দিন। যখন আপনি গভীর ভাবে দম নিতে ও ছাড়তে পারবেন তখনই চমৎকার অনুভুতি অনুভব করতে পারবেন। প্রশান্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় কৌশল এটা।
ইয়োগা করার সময় জুতা-মোজা খুলে রাখুন, মোবাইল সাইলেন্ট করে রাখুন,আরামদায়ক পোশাক পরুন,হাতের কাছে তোয়ালে রাখুন ঘাম মোছার জন্য। ইয়োগা করার সময় ক্লান্ত লাগলে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিন।
আপনার ইয়োগা শিক্ষককে অনুসরণ করাটা কঠিন মনে হতে পারে। আপনার মনে হতে পারে খুব দ্রুত অথবা খুবই আস্তে শেখাচ্ছেন। শিক্ষকের পদ্ধতিকে বিশ্বাস করে আপনাকে সামনে এগোতে হবে। যদি কোন শিক্ষকের পদ্ধতি আপনাকে অনুরণিত না করে তাহলে অন্য শিক্ষকের কাছে যেতে হবে। ইয়োগার সব পদ্ধতি সবাই শিখতে পারবেন না। আপনার জন্য কোন আসনটি প্রযোজ্য তা জেনে নিয়ে শুরু করুন ইয়োগা।
আপনি নিজেকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করতে চান? কিন্তু কি করে কি করতে হবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। তাদের জন্যই এ সাত প্রকার ব্যায়াম। এগুলো আপনার দেহ গঠনে ভূমিকা রাখবে।
পাশাপাশি অতিরিক্ত চর্বি পুড়িয়ে দেহকে মুটিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে। তবে এর সঙ্গে অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। সুতরাং অন্য কিছু না করে চলুন ব্যায়াম সাতটি করা যাক:
দড়ি লাফ:  সর্বশেষ কবে দড়িতে লাফিয়েছেন? নিশ্চয়ই ছোট থাকতে। কিন্তু এর উপকারিতার কথা জানলে এ বয়সেও লাফাতে মন চাইবে। দড়ি লাফ সবচেয়ে সহজে সবখানে করা যায় এমন একটি ব্যয়াম। যেকোনো ব্যায়ামের চেয়ে এটি প্রতি মিনিটে দ্রুত ক্যালোরি পোড়ায়।
স্কোয়াটস: দেহের কোনো বিশেষ অঙ্গ নয়, স্কোয়াটসের মাধ্যমে পুরো দেহের ব্যায়াম হয়। শক্তিশালী এ ব্যায়াম আপনার দেহের মাংসপেশী শক্ত করে ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করবে।
পুশআপ: কষ্টদায়ক বলে অনেকেই পুশআপ এড়িয়ে চলেন। কিন্তু এটি আপনার দেহের জন্য অত্যন্ত দরকারি। বিভিন্ন ধরনের পুশআপে বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। এছাড়া হার্ট, কার্ডিওভাসকুলার, ব্যাকপেইন ও পোশ্চারের জন্যও পুশআপ উপকারি।

লাঙ্গস: পায়ের মাংসপেশি গঠনে লাঙ্গস খুব দরকারি। প্রতিদিন ৩ সেটের ১০টি লাঙ্গস সবচেয়ে ভালো ফল দেয়।
সাঁতার:  সাতারপ্রেমীদের জন্য সুখবর-দেহ গঠনের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যায়াম হচ্ছে সাতার। যেহেতু সাঁতারে দেহের প্রতিটি অঙ্গপ্রতঙ্গ নড়াচড়া করে, তাই মাংসপেশি মজবুত করতে সাঁতারের বিকল্প নেই। সেসঙ্গে রক্তচাপ ও হৃদপিণ্ডের জন্যও এটি কার্যকরী।

দৌঁড়ানো: দৌঁড়ের উপকারিতা অনেক। চাপমুক্ত রাখতে, হৃদপিণ্ড সবল করতে, হতাশা দূর করতে ও ক্যালোরি ধবংস করতে এর বিকল্প নেই।

সাইক্লিং: নিজেকে ফিট রাখতে সাইক্লিং অনেক উপকার করে থাকে। এটি আপনার পা, মাংসপেশি ও দেহের পেছনের অংশ ঠিক রাখবে। হৃদপিণ্ড সচল রেখে ওজন কমাবে।
গ্রীষ্মের দাবদাহে সব বয়সী মানুষের প্রাণই ওষ্ঠাগত প্রায়। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় শিশুরা। এই গরমে তাদের যত্ন নিতে হবে। তাহলেই শিশুরা থাকবে সুস্থ এবং প্রাণবন্ত। তাই জেনে নিন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য ও পরামর্শ:
—একটি শিশুর শরীরে গড়ে প্রতিদিন এক থেকে দেড় লিটার পানি প্রয়োজন হয়। শিশুরা ঘামে বেশি, তাই প্রচুর পরিমাণ পানি পান করাতে হবে। মৌসুমি ফলের মধ্যে তরমুজ, আনারস, আম, কাঁঠাল, লিচু, আঙুর, বাঙ্গি, আপেল খাওয়াতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শিশুর পছন্দকে গুরুত্ব দিন। ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা কোমল পানীয় বা কৃত্রিম জুস পান করাবেন না। এগুলো শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
—এ মৌসুমে শিশুরা ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে, যা পাঁচ-সাত দিন স্থায়ী হয়। অনেক সময় বোঝা যায় না, শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া উচিত কি না। জ্বর ১০০ ডিগ্রি হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়াতে পারেন। শিশুকে ভারী কাপড়ে না ঢেকে বরং পাতলা জামাকাপড় পরাবেন। ঘরের ফ্যান চালিয়ে রাখুন।
—গরমে শিশুদের চুলের গোড়া ঘেমে যায়। তাই চুল যতটা সম্ভব ছোট রাখাই ভালো। এতে চুলের গোড়া ঘেমে গেলেও তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। যেসব শিশুর ঠান্ডার সমস্যা আছে, তাদের চুল কখনোই বড় রাখা উচিত না। গোসলের পর চুল ভালোভাবে মুছে দিন। বড় ফাঁকওয়ালা চিরুনি দিয়ে চুল ঠিকভাবে আঁচড়ানো উচিত। এরপর চুল শুকিয়ে গেলে তা ভালোভাবে বেঁধে দিন। রোদ থেকে ঘরে ফিরেই সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে গোসল করানো থেকে বিরত থাকুন।
—গ্রীষ্মকালে শিশুকে প্রতিদিনই গোসল করাতে হবে। ঠান্ডা বা সর্দি-কাশির ভয়ে অনেকে সন্তানকে গোসল করাতে চান না। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে শরীরের ঘাম জমে গিয়ে আরও অসুখ-বিসুখের শঙ্কা থাকে। গোসলের সময় শিশুর গায়ে সাবান দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। তবে শ্যাম্পু বেশি ব্যবহার না করাই ভালো, সপ্তাহে দুদিনই যথেষ্ট। গোসলের পর শিশুর শরীর ও মাথা ভালো করে মুছে দিয়ে পাউডার লাগানো ভালো। এতে করে ঘামাচির যন্ত্রণা থেকে শিশু থাকবে নিরাপদ। শিশুর ব্যবহৃত প্রসাধন সামগ্রী যেন অবশ্যই ভালো মানের হয়।
—ঘামাচির যন্ত্রণা বেশি হলে শিশুকে হিস্টাসিন বা অ্যান্টিহিস্টামিন সিরাপ দিন। এতেও চুলকানি না কমলে হাইড্রোকর্টিসন (১%) মলম দিনে ২ বার করে ৫ থেকে ৭ দিন লাগাতে হবে। গরমের সময় লোশন ব্যবহার মোটেও ঠিক নয়। এতে বাচ্চার শরীরে ঘাম জমে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
—গরমে শিশুদের অবশ্যই নরম ও পাতলা সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা পোশাক পরাতে হবে। কেননা, শিশুরা ঘামে বেশি। ঢিলেঢালা পোশাকে বাতাস ঢুকতে পারে, এতে সহজেই ঘাম শুকিয়ে যায়। এ ছাড়া থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট পরালে আরাম পাবে।
—গ্রীষ্ম ও বর্ষায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব যায় বেড়ে। তাই সাবধান। খাওয়ানোর আগে শিশুর ব্যবহৃত বাটি, প্লেট সেদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। খাবার পানি ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে। খাবার তৈরি ও পরিবেশনের আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন।

Wednesday, April 5, 2017

কানে পানি ঢুকে কান বন্ধ হয়ে যাওয়ার চাইতে বিব্রতকর সমস্যা আর কিছুই হতে পারে না। খুবই বিচিত্র একটা অনুভব, সেটা কাউকে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। অন্যদিকে কানে পানি রয়ে গেলে কান পাকা ও তীব্র ব্যথা সহ নানান রকমের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। অনেকেই কানে পানি ঢুকলে কটন বাড দিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। এই কাজটি একেবারেই ভুল! বরং জেনে নিন কান থেকে পানি বের করার ৬টি সঠিক উপায়।

১) কান থেকে পানি বের করার সবচাইতে নিরাপদ উপায়টি হচ্ছে গ্রাভিটিকে কাজ করতে দেয়া। যে কানে পানি ঢুকেছে, সেই দিকে মাথাটি কাত করুন। তারপর হাতের তালু রাখুন কানের উপরে এবং চাপ দিন। চাপ দিয়েই হাতটি সরিয়ে নিন। দেখবেন খানিকটা পানি বের হয়ে গেছে। এভাবে বেশ কয়েকবার করুন। পানি বের হয়ে কান বন্ধ হওয়ার সমস্যা দূর হবে।

২) আরেকটি উপায় হচ্ছে নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে পানি বের করা। একটি লম্বা শ্বাস নিন, এবার দুই আঙুল দিয়ে নাকের ফুটো বন্ধ করে ফেলুন। এখন এই বন্ধ নাক দিয়েই নিঃশ্বাস ফেলার চেষ্টা করুন। খুব জোরে বল প্রয়োগ করতে হবে না, সাধারণত যেভাবে নিঃশ্বাস ফেলেন সেভাবে ফেললেই হবে। কানে আওয়াজ শুনতে পাবেন, বুঝবেন যে পানি বের করে বন্ধ কান ঠিক হয়ে গেছে।

৩) যে কানে পানি ঢুকেছে, সেই কানটি বালিশে চাপা দিয়ে শুয়ে থাকুন এবং সম্ভব হলে ঘুমিয়ে পড়ুন। ঘুম ভাঙলে দেখবেন পানির সমস্যা নেই।

৪) চুইং গাম বা যে কোন কিছু চিবিয়ে খান। যেটা বেশ করে চিবাতে হয়, এমন খাবার বেছে নিন। খাবার চিবানোর সময় যে মুভমেন্ট তৈরি হবে, সেটা বন্ধ কানকে খুলে দিতে সহায়ক।

৫) হাই তুললেও কানের পানি বেরিয়ে বন্ধ কান খুলে যায়।

৬) হেয়ার ড্রায়ার বেশ ভালো কাজ করে এক্ষেত্রে। একদম লো-তে ড্রায়ার সেট করুন। তারপর কান থেকে ১০/১২ ইঞ্চি দূরে রেখে তাপ দিন। কানের পানির সমস্যা দূর হবে।
যদি কিছুতেই কিছু না হয়, অতি সত্বর ডাক্তারের কাছে যান। অনেক সময় ওষুধেরও প্রয়োজন পড়ে কানের পানি বের করতে। তাই এই বিষয়টিকে অবহেলা করবেন না মোটেও।

Monday, April 3, 2017

কমবেশি ভয় অনেকেরই লাগে। কিন্তু এই ভয়ের কারণে যখন কোন ব্যক্তির কাজের ব্যাঘাত ঘটে, চলাফেলা সীমাবদ্ধ হয়ে যায় তখনই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এই ভয়ভীতি সমস্যা নিয়ে ফকির-কবিরাজ এ-ডাক্তার ও-ডাক্তার দেখাতে দেখাতে সর্বস্বান্ত হয়েছে অনেকে।
লক্ষণ:
১. অহেতুক ভীতি, বুকধড়ফড়, অস্থির, অশান্তি লাগা।
২. হঠাৎ দুঃসংবাদ কিছু শুনলে খুব বেশি নার্ভাস হয়ে যায়, মুখ শুকিয়ে যায়, অস্থির হয়ে পড়ে, মাথায় পানি ঢালতে হয়।
৩. দেখা গেছে, সিলেট থেকে ঢাকা আসার সময় আমজাদ মিয়া তার ৬ বছরের ছেলেকে সঙ্গে করে আসছেন কারণ পথে যদি পড়ে যাই অথবা অসুস্থ হয়ে যাই, ছেলে ধরতে পারবে। সঙ্গে লোক থাকলে সাহস লাগে তখন চলাফেরা করা যায়।
৪. বাথরুমে গেলে দরজা খোলা রাখতে হয়, দরজা বন্ধ করলে দম আটকে আসে।
৫. দেখা যায় পরীক্ষার ভয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হয়ে যায়। কেউ কেউ এত নার্ভাস থাকে যে, তিনদিন আগে থেকেই বুক লাফায়, মুখ শুকায়, কথা বের হয় না, ঘুম হয় না, পাতলা-পায়খানা শুরু হয়ে যায়।
৬. পাত্র পক্ষ মেয়েকে দেখতে আসেব, টেনশনে অস্থির কিভাবে ছেলের মার কাছে হাজির হবে, কি জিজ্ঞাসা করবে? এসব টেনশনে মেয়ের ঘুম, খাওয়া-দাওয়া বন্ধ প্রায়।
৭. সৌদি চাকরি করতে যাবে সবকিছু ঠিকঠাক কিন্তু বাধা হলো বিমানে উঠতে ভয়, পরে বাধ্য হয়ে ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
৮. এমনও দেখা গেছে, বেশি মানুষের সামনে দিয়ে হাঁটাচলা করতে পারে না মনে হয় মানুষগুলো তার দিকে শকুনের মতো তাকিয়ে আছে।
৯. সুলতান মিয়া অফিসে বসের ভয়ে চাকরি ছাড়ার উপক্রম। বসকে দেখলেই বুক ধড়ফড়, কাঁপে, অস্থির লাগে। পরে আত্মীয়স্বজনের পরামর্শ ক্রমে সাইক্রিয়াটিক দ্বারা চিকিৎসা করে এখন নিয়মিত চাকরি করছে।
১০. শিক্ষকদের বেত ও মারের ভয়ে মাদ্রাসার ছাত্র লিমন এখন পড়ালেখাই বন্ধ করে দিয়েছে।
১১. বাইরের গেটের চাবি হাতে না থাকলে টেনশনের আর শেষ থাকে না। যদি অসুস্থ হয়ে যাই বের হবো কিভাবে এই রকম হাজারো রোগী অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিভিন্ন ডাক্তার দেখিয়ে কোন ফল পায় নাই তখন রোগীদের ভীতি আরও বেড়ে যায়। এক সময় তারা ঘর থেকেই বের হতে ভয় পায়।

কি কি কারণে হয়
১. কবরস্থান, মৃত ব্যক্তি, দুর্ঘটনার খবর, রোগী, হাসপাতাল, রক্ত ইত্যাদির ভয়।
২. অহেতুক ভয় যদি পড়ে যাই। নিকট আত্মীয় কেউ হার্টের অসুখে মারা গেছে তারপর থেকেও ভয় শুরু হতে পারে।
৩. শিক্ষকদের বেতের অথবা মারের ভয়।
৪. অফিসের বসের ভয়।
৫. পোকা-মাকড়ের ভয়।
৬. বিমানে উঠতে ভয়।
৭. পরীক্ষার আগে ভয়।

কাদের মধ্যে বেশি
১. ছোটবেলা থেকেই লাজুক প্রকৃতির, কম কথা বলে, বন্ধুত্ব কমÑএই ধরনের ছেলেমেয়েদেরও মধ্যে বেশি দেখা যায়।
২. বিভিন্ন সামাজিক বাধার মধ্যে বড় হয়েছে এমন ছেলেমেয়েদেরও দেখা যায়।
৩. মানসিক চাপের মধ্যে ছিল অথবা জীবনে কোন নেতিবাচক পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে বায়োলজিক্যাল কারণ। অতএব, ফোবিয়া একটি মানসিক সমস্যা। যার চিকিৎসা আছে। এই চিকিৎসায় ১০০% রোগীই সুস্থ হয়ে যায় এবং যার যার কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারে। 
Powered by Blogger.

Contact us

Name

Email *

Message *

Followers

Featured Posts

Social Icons

Pages

Facebook

Video

সর্বাধিক পঠিত

Our Facebook Page

Text Widget